রজতাভ রুদ্র
ভারতের পাঞ্জাবের একটি
সুন্দর গ্রামে ছিল একটা সবুজ বাগান। সেই বাগানের পাশে একটা বড়ো দালান ঘর ছিল। সেই
দালানে বাস করত তিনভাই ও তাদের মা-বাবা। সবথেকে ছোটভাইয়ের নাম ছিল রামু। মেজভাইয়ের
নাম ছিল রতন ও সবথেকে বড়ভাইয়ের নাম ছিল রাখাল।
তারা তিনভাই তখনও ছোটো
ছিল। রামুর ডাইনোসরের কমিকস পড়ার অনেক আগ্রহ ছিল। রতনের ডাইনোসরের ফসিল খোঁজার
ভীষণ শখ ছিল আর রাখালের ডাইনোসরের ছবি আঁকার শখ ছিল।
দিন গেল, বছর গেল, রামু,
রতন আর রাখাল বড়ো হল। তখন তারা সবসময় ডাইনোসরের ভিডিও গেম খেলত। তাদের স্বপ্নে সবসময়
ডাইনোসর আসত। তখন তাদের মা-বাবা চিন্তা করল, তাদের মনে হয় সবসময় খারাপ স্বপ্ন আসে।
কিন্তু তারা ভুল চিন্তা করছিল। তাদের সবসময় মজার স্বপ্ন আসত। তখন তারা বড়ো বড়ো ওঝা
ডেকে পাঠাল। তখন তিনভাইয়ের মনে হল তারা তাদের মজার স্বপ্নকে মা-বাবার কাছ থেকে
দূরে রাখবে। তখন তিনভাই মিলে সিদ্ধান্ত নিল যে তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে ডাইনোসরের
খোঁজে লেগে পড়বে। তখন রামু, রতন আর রাখাল নিজের নিজের ডাইনোসরের কমিকস, ভিডিও গেম,
ক্যামেরা ও সারা বিশ্বের ডাইনোসরের মানচিত্র নিয়ে বেরিয়ে পড়ল। কিছু সময় পরে তাদের
মা-বাবা এসে কান্নাকাটি করতে লাগল।
তার কিছুদিন পরে তারা
রেলস্টেশনে গেল। তারা ট্রেনের টিকিট নিয়ে বেরিয়ে পড়ল। তারা প্রথমে ভারত থেকে শুরু
করে অনেক জায়গায় ঘুরল। তারা অনেক ডাইনোসরের স্ট্যাচুর ছবি তুলেছিল। ডাইনোসরের
মিউজিয়ামে গিয়ে অনেক জ্ঞান অর্জন করল ডাইনোসরের ব্যাপারে। তারা বিশ্বের সব জায়গায়
ঘুরেছিল। কিন্তু আসল ডাইনোসরকে দেখেনি। তারা দুটি জায়গা ঘুরল না। সে দুটো জায়গা হল
আফ্রিকার গভীর জঙ্গল ও জুরাসিক পার্ক।
তারা প্রথমে আফ্রিকায়
গেল। অনেক পশুপাখিকে দেখল কিন্তু ডাইনোসরকে দেখল না। শেষে জুরাসিক পার্কে গিয়ে
ডাইনোসরের দর্শন পেল। তারা অনেক ডাইনোসর দেখল যেমন, টি-রেক্স, ট্রাইসেরাটপস, স্টেগোসরাস
ইত্যাদি আরও অনেক ডাইনোসরের খোঁজও করল, আবার অনেক ডাইনোসরের বন্ধুও হল। তারা একটা
অসহায় ডিপ্লোডোকাসের বাচ্চাকে পালতে লাগল। তখন থেকে তাদের অনেক বই ছাপতে লাগল আর
তখন থেকেই মানুষ ওদেরকে ‘ডাইনোসর সন্ধানী’ নামে জানতে লাগল।
তখন ভারতের পাঞ্জাবে ওদের
মা-বাবারা মনে মনে ভাবল, আমরা তাদের স্বপ্ন থেকে দূরে সরাতে চেয়েছিলাম। যদি আমরা তাদের
স্বপ্ন থেকে দূরে সরিয়ে দিতাম তাহলে তারা বিখ্যাত হতে পারত না।
_____
অলঙ্করণঃ রজতাভ রুদ্র
ট্রেনের টিকিট কেটে আফ্রিকা? এই ভাবে কি বাচ্চাদের ভুল বোঝায় না কি বাচ্চারা বোকা? এই গল্পতে তিন বন্ধু তে অনেক কিছু করতে পারত যাতে করে তারা আফ্রিকা যাবার পয়সা জোগাড় করতে পারত। গল্প বিশ্বাসযোগ্য করা উচিত বিশেষ করে বাচ্চাদের গল্প ।
ReplyDeleteসম্মানিত পাঠক, আপনি একবার যদি যাচাই করে নিতেন তবে অবশ্যই দেখতে পেতেন যে এই গল্পটির রচয়িতা একটি দশ বছরের ছেলে। সে ক্লাশ ফোরে পড়ে। তার মনের জানালায় উঁকি দেওয়া কল্পনাগুলোই নিজের মতো যত্ন করে অক্ষরের রূপ দিয়েছে। সে কি কম কথা? দুনিয়াদারীর সে কীই বা বোঝে? অথচ একটা গল্প লেখার সাহস দেখিয়েছে। চুলচেরা বিশ্লেষণের লেখা হয়তো এ নয়। তাকে উৎসাহ না দিতে পারি অন্তত নিরুৎসাহ করাটা গর্হিত কাজের মধ্যেই পড়বে বলে মনে করি। ধন্যবাদ!
Deleteভারী চমৎকার লিখেছিস রে। কল্পনাকে এমনি করে বুড়োদের যুক্তির শেকল খুলে পাখির মত উড়িয়ে দে। চশমা আঁটা পণ্ডিতের মুখের ওপর হেসে তোর গল্পের চরিত্ররা ইচ্ছেখুশিতে প্রকৃতির সব যুক্তিকে ভেঙে উড়িয়ে দিয়ে বেঠিকের রামধনু ওঠাক ব্যকরণ মানা তাসের দেশে। সে গল্প ডেকে বলুক, শুনছ, এটা তোমার ইশকুল নয়। এখানে দুয়ে দুয়ে চারের বদলি সতের হতেই পারে। মজাটা পেলেই হল।
ReplyDelete