সপ্তকথা
সুমন দাস
আমাদের ছোটোবেলায় আমরা যা
জানতাম, আজ ইন্টারনেটের যুগে এসে তোমরা আমাদের থেকে ঢের ঢের বেশি জানো। আরশোলা কী
কী খায়, ফড়িংয়ের ক’টা ঠ্যাঙ ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি। তবুও মাঝে মাঝে দুয়েকটা বিষয়
নিয়ে তোমাদের সাথে কথা বলতে মন চায়।
আজ আমি সাতটি এইরকম আবিষ্কারের
কথা নিয়ে তোমাদের সাথে টুকটাক আলোচনা করব। দ্যাখো তো, তোমরা এর মধ্যে ক’টা
আবিষ্কারের কথা জানো। আমায় জানাতে ভুলো না কিন্তু। আর জানা কথার সাথে যদি আরও কিছু
জেনে থাকো বা আমার এই লেখাটা পড়তে পড়তে কোনও একটা আবিষ্কার নিয়ে আরও একটু পড়াশোনা
যদি করো তাহলে কিন্তু আমায় বা ম্যাগাজিনের বাকি সদস্যদের জানাতে ভুলো না। আমার ঠিকানা? সম্পাদক মহাশয়ের
স্মার্টফোনে সেভ করা আছে। উত্যক্ত না হলে কিন্তু উনি আবার ‘রা’টি কাড়েন না। অতএব,
বাকিটা তোমাদের হাতে... আমি অপেক্ষায় থাকব তোমাদের উত্তরের।
|| ক্যামেরা ||
যোহান স্কুলজে (Johann Schulze, Germany) নামের এক ভদ্রলোক হঠাৎ দেখেন (১৭২৭ খ্রিস্টাব্দ) চক, নাইট্রিক অ্যাসিড আর রুপো একত্রে সূর্যালোকে ফেলে রাখলে মিশ্রণের কালোত্ব ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। কিন্তু এটা পার্মানেন্ট রঙ ছিল না। ১৭৭৭ সালে কার্ল স্কিল (Carl Scheele, Sweden) অ্যামোনিয়া মিশিয়ে এই বর্ণের একটি পার্মানেন্ট অবস্থার সৃষ্টি করেন।
জোসেফ নিসেফোর নিপসে (Joseph Nicephore Niepce) ১৮২৬ সালে এই পদ্ধতি অবলম্বন করে প্রথম ‘ফটোগ্রাফিক ইমেজ’ সৃষ্টি করেন। আজ তার সুফল ভোগ করছি আমরা। এক্সপোসার টাইম? মাত্র ৮ ঘন্টা!
ওপরের ছবিটি ১৮২৬ সালে নিপসের তোলা (যেটি সর্বপ্রাচীন ফটোগ্রাফ বলে পরিগণিত হয়), তাঁর নিজের বাড়ির জানালা থেকে বাইরের দৃশ্য।
|| সংবাদপত্র ||
"Relation aller Furnemmen und
gedenckwurdigen"
ইংরেজি নয়, ফরাসী ভাষা ইংরেজি তর্জমায়। পৃথিবীর প্রথম সংবাদপত্র। ছাপানো। সাল ১৬০৫। আবিষ্কর্তা জোহান কার্লোস (Johann Carolus)।
অবশ্য ১৫০০ বছর আগে সম্রাট জুলিয়াস সিজার পাথরে লেখা সংবাদ প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন
- Acta Diurna, যা মূলত যুদ্ধক্ষেত্রের সংবাদ বহন করে নিয়ে যেত
আসত, একধরনের সংক্ষিপ্ত সংবাদ বলা যেতে পারে। প্রিন্টেড নয়, কিন্তু এক্কেবারে খোদিত পাষাণ!
সংবাদপত্রের ব্যাপারটা মাথায় আসতেই কার্লোস প্রথমে নিজের হাতেই লিখতেন, অনেক হাতে-কপি করতেন এবং ধনী সদস্যদের
বিক্রি করতেন। কিন্তু এত বেশি এর চাহিদা হতে লাগল যে ১৬০৪ সালে উনি একটা প্রিন্টিং প্রেস কিনতে বাধ্য হলেন এবং হু হু করে এর জনপ্রিয়তা বাড়তে লাগল। তা
সত্ত্বেও একসময় এই কাগজ বন্ধ হয়ে যায়। সঙ্গের ছবিটা তারই একটি কপি যা সবচেয়ে পুরনো কপি বলে পরিগণিত হয়। বর্তমানে এটি হেইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রাখা আছে।
বর্তমানে
Haarlems Dagblad (ডাচ সংবাদপত্র) হল দুনিয়ার সবচেয়ে পুরনো সংবাদপত্র যা এখনও চলছে ১৬৫৬ সাল থেকে।
এখনকার জগতে যখন ইন্টারনেট একটা বড়ো সংবাদমাধ্যম হয়ে উঠেছে তবুও সারা পৃথিবীজুড়ে এক বিলিয়নেরও বেশি মানুষ দৈনিক সংবাদপত্র পড়ে থাকেন।
|| চুয়িং
গাম ||
লোকে বলে আমেরিকার
কাণ্ড। কিন্তু অতীত ইতিহাস থেকেই এর ব্যবহার চলে আসছে। প্রাচীন গ্রীকেরা চিবাত (Mastic গাছের রেজিন থেকে তৈরী), অধুনালুপ্ত মায়া সভ্যতার
অধিবাসীর চিবাত (Sapodilla গাছের রবার
থেকে প্রাপ্ত), নেটিভ
আমেরিকানরা চিবাত (Spruce গাছের রেজিন থেকে প্রাপ্ত)।
সত্যি বলতে জন কার্টিসের (John
Curtis) মাথায়
এই চুয়িং গামের বাণিজ্যিকীকরণের কথা প্রথম মাথায় এসেছিল। ফলস্বরূপ বাজারে
এল ‘স্প্রুস গাম’।
আমরা
যে ধরণের গাম চিবাই তা এল আরও পরে, আকস্মিকভাবে। মেক্সিকান
জেনারেলের আদেশানুসারে রাবারের চুয়িং গামের পরিবর্ত হিসাবে অন্য কিছুর চুয়িং গাম
আনতে গিয়ে থমাস এডামস (Thomas Adams) মিষ্টি এবং
ফ্লেভারযুক্ত চুয়িং গাম আবিষ্কার করেন। উনি সিরাপ, চিনি আর
পিপারমিন্ট মিশিয়ে আধুনিক চুয়িং গাম বানিয়ে ফেলেন। ১৮৯১ সালে রিগলি (Wrigley)
এন্টারপ্রাইস শিল্প উৎপাদন হিসাবে একটা ফ্যাক্টারিই
বানিয়ে ফেলে এবং বর্তমানে এটাই আমেরিকার সবচেয়ে বড়ো চুয়িং গাম প্রস্তুতকারক
কোম্পানি।
সঙ্গের
ছবিটি রিগলির কোম্পানিকৃত চুয়িং গামের বিজ্ঞাপন, ১৮৯৩
খ্রিস্টাব্দের।
|| সার্জেন রোবোট ||
১৯৫৪ সালে জর্জ ডেভল (George Devol) প্রথম প্রোগ্রামেবল রোবটের শিল্প উৎপাদন শুরু করেন। তথ্য এবং আদেশ স্মৃতিতে রেখে দেওয়ার জন্য প্রয়োজন হত ম্যাগনেটিক স্টোরেজ ডিভাইস। ১৯৬০ সালে আরও উন্নততর ভার্সান আসে এবং ১৯৭৮ সালে বাণিজ্যিকভাবে এর উৎপাদন শুরু হয়।
ডাঃ ইক সান কো (Yil San Kwoe) ১৯৮৫ সালে প্রথম সফটওয়ার তৈরি করেন যেটা রোবটের মধ্যে প্রতিস্থাপিত হলে রোবটটি অপারেশান করতে সক্ষম হয়। এরপর? বাকিটা ইতিহাস। ‘ওলি’ নামক রোবটটি নিউরোসার্জারি করে শোরগোল ফেলে দেয়। মাথা ফুটো করার যন্ত্র, CT Scanner (অভ্যন্তরীণ 3D ছবি দেখার জন্য), আর বাইরে থেকে ডাক্তারদের নির্দেশ –
কেল্লা ফতে। ওলিকে মূলত শরীরের জটিল জায়গায় অবস্থিত টিউমারগুলোর বায়োপসি করবার জন্যই ব্যবহার করা হত।
প্রথম ওলিকে কীভাবে পরীক্ষা করা হয়? শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চার
টুকরো তরমুজ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ওলি সেগুলোকে খুঁজে বের করে বাইরে নিয়ে আসে।
১৯৯৮ সালে ‘দ্য ভিঞ্চি’ রোবটটি হার্ট (Coronary
artery bypass graft) অপারেশানে ডাক্তারদের সাহায্য করে।
আর ১৯৯৯ সালে? আবিষ্কৃত হয় ‘Beating Heart’। এই সার্জারিতে স্টারনাম ওপেন করা হয়নি, এমনকি কৃত্রিমভাবে লাইফ সাপোর্ট দেওয়ারও প্রয়োজন পড়েনি যা স্বাভাবিক বাইপাস সার্জারিতে করা হয়।
|| কেমোফ্ল্যাজ ||
"Camouflage is a game we like to play, but
our secrets are revealed by... what we want to conceal."
~ Russell Lynes
~ Russell Lynes
বহুকাল আগেই এর ব্যবহার ছিল। মানে ওই শিকারি আর কিছু গেরিলা আক্রমণ টাইপের যুদ্ধে (উচ্চশ্রেণীর সেনাদলে আর
কী)। কিন্তু ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষে এর ব্যবহার অত্যাবশ্যকীয় পর্যায়ে চলে যায়। এর আগে যেকোনও সেনাদলে
উজ্জ্বল ইউনিফর্মেরই ব্যবহার ছিল যেমন, ফরাসিবাহিনীরা পরত নীল শার্ট ও লাল প্যান্ট, মনস্তাত্ত্বিকভাবে শত্রুসেনার প্রতি নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করার জন্য। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির মেশিনগানের সামনে কিন্তু এই মনস্তাত্ত্বিকতা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। আস্তে আস্তে কেমোফ্ল্যাজের জন্য ড্রেস বানানোর হিড়িক পড়ে। ১৯১৫ সালে তারা তাদের কেমোফ্ল্যাজ পোষাক অফিসিয়ালি পড়তে শুরু করে, Section de
Camouflage।
এর ইতিহাস? সেই গল্পেই আসছি।
এর সূচনা ভারতে। তখন ইংরেজদের আধিপত্য ভারতে। ১৮৫৭ সালের দেশজুড়ে ঘটে যাওয়া সিপাহী বিদ্রোহ তাদের হাড় কাঁপিয়ে দেয়। এত বেশি পরিমাণে ইংরেজসেনার মৃত্যু ঘটে যে তারা লুকিয়ে যুদ্ধ করতে খানিকটা বাধ্যই হয়। তাদের সেই বিখ্যাত পোষাক এক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় এবং সৃষ্টি হয় বিখ্যাত ‘খাকি’ পোষাকের। ১৮৮০ সালে ভারতবর্ষের সর্বত্র ইংরেজরা এই খাকি পোষাক পরতে শুরু করে এবং সারা পৃথিবীর বাকি ইংরেজসৈন্যেরা পরতে শুরু করে ১৯০২ থেকে, দ্বিতীয় বুয়ের যুদ্ধে।
প্রাথমিকভাবে তাবু রঙ করার জন্য আর্টিস্টদের আনা হয়। বিখ্যাত জলপাই রঙে রাঙিয়ে সেখান থেকে কেটে পোষাক বানানো শুরু হয় এবং কামান ঢেকে রাখার কাজেও ব্যবহৃত হতে শুরু করে। এখন তো সর্বত্রই প্রায় একই রঙের কেমোফ্ল্যাজ ইউনিফর্ম ব্যবহৃত হচ্ছে, তবে আলাদা আলাদা প্যাটার্নে। ১৯৯০ সালে কানাডার সৈন্যবিভাগ কম্পিউটার পরিচালিত কেমোফ্ল্যাজের ডিজাইন আবিস্কার করে যা আজকের যুগে ৪০ শতাংশ বেশি কার্যকরী। মানুষের চোখকে ধোঁকা দেওয়ার ক্ষমতার
ন্যূনতম দূরত্ব ধরা হয় ৬৫৬ ফুট বা ২০০ মিটার।
সঙ্গের ছবিটি ১৯১৫ সালে La
Baiomette ম্যাগাজিনে প্রকাশিত কেমোফ্ল্যাজ পোষাকের ওপর একটি কৌতুকচিত্র।
|| ইলেকট্রিক জেনারেটর ||
ব্যাপারটা খুব সহজ ছিল না। মানে মাইকেল ফ্যারাডে আর জোসেফ হেনরি ডায়নামো আবিষ্কার করে ফেলেন ১৮৩০ সালে। কিন্তু এই আবিষ্কার যত না ছিল ব্যবহারিক পদার্থবিদ্যা তথা টেকনিক্যাল ক্ষেত্রে তার থেকেও অনেক বেশি আবিষ্কারের নেশায়। ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে এর প্রয়োগের ব্যাপারটা মাথায় আসে যেনোবি থিওফিল গ্র্যামি-র (Zenobe Theophile Gramme), বড়োসড়ো ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট তথা ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, ১৮৬৯ সালে। তৈরি হয় হাই ভোল্টেজ ডিসি জেনারেটর।
তার দুই বছর পরে ফরাসী ইঞ্জিনিয়ার হিপ্পোলিট (Hyppolyte)-এর সাথে জোট বাঁধেন এবং ১৮৭৩ সালে বানিয়ে ফেলেন ডায়নামো। অতঃপর জেনারেটর বা ইলেকট্রিক মোটরের আত্মপ্রকাশ। ভিয়েন্না এক্সপোজিশনে এটির এক্সিবিশনে
তাঁরা দেখান কীভাবে এর বহুল ব্যবহার করা সম্ভবপর হতে পারে। কীভাবে এটি কারেন্ট উৎপন্ন করছে এবং তাই নয় অত্যন্ত বড়োসড়ো কাজে এর ব্যবহার কীভাবে হওয়া সম্ভব।
১৮৮০ সালে সেবাস্টিয়ান জিয়ানি দে ফেরেন্তি (Sebastian
Ziani de Ferranti) যে ডায়নামো বানান উইলিয়াম থমসনের (মনে পড়ে? না? পরবর্তীকালে একে লর্ড কেলভিন নামে ডাকা হত) সহায়তায় (নাম ফেরেন্তি ডায়নামো) তার পেটেন্ট কিনে নেন। লণ্ডন ইলেকট্রিক সাপ্লাই তাকে বরাত দেয় বিশ্বের প্রথম পাওয়ার স্টেশন বানানোর। ফেরেন্তির বানানো ডিজাইনকে সম্পূর্ণ করা হয় ১৮৯০ সালে। এই পাওয়ার স্টেশন হাই ভোল্টেজ এসি কারেন্ট উৎপন্ন করতে সক্ষম। লন্ডনের রাস্তাঘাটে এই বিদ্যুতের ব্যবহার শুরু হয় এবং পরবর্তীকালে টমাস আলভা এডিসন এবং ওয়েস্টিং হাউস কোম্পানির হাত ধরে এর ক্ষমতাকে আরও উন্নত করা হয়।
ফ্যারাডের ডায়নামো
আবিষ্কার এক বৈপ্লবিক
আবিষ্কার। এরই হাত ধরে কারেন্ট যে কী বিস্তৃত ক্ষেত্রে এবং কী বিশাল বিশাল সিস্টেম অবলীলায় চালানো যায় তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে?
সঙ্গের ছবিটি গ্র্যামির ডায়নামো।
|| অ্যাম্বুলেন্স ||
"Before...
the flying ambulance, we seldom saw men who had lost both legs and arms"
~ Dominique-Jean Larry
~ Dominique-Jean Larry
১৭৯০-এর আশেপাশের ইতিহাস,
নেপোলিয়নের
ইতিহাস। এই মানুষটি শুধু ফ্রান্সের রাজনীতিই নয়
ইউরোপসমেত এশিয়ার
ত্রাস এবং তাদের রাজনীতি ও ভৌগলিক পরিসীমা ক্ষেত্রে এক বড়ো চ্যালেঞ্জ হয়ে
দাঁড়িয়েছিলেন এ সবাই জানে। কিন্তু এর পাশাপাশি এক বড়ো আবিষ্কার
এই সময়েই হয়ে গিয়েছিল যা আজকের সময়ে অত্যন্ত আবশ্যকীয়।
১৭৯২ সালে নেপোলিয়নের সেনাবিভাগের এক সার্জেন ছিলেন
ডমিনিক-জেন ল্যারি। যুদ্ধক্ষেত্রে যারা আহত অবস্থায় পড়ে
থাকত তাদের ঠিকঠাক চিকিৎসা বা অপারেশন ওই মুহুর্তেই করা সম্ভবপর হয়ে উঠত না পাশে
ঠিকঠাক যন্ত্রপাতি না থাকার দরুন বা তাকে যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে সেনাশিবিরে না আনতে
পারার দরুন। ফলে অনেক সেনারই মৃত্যু ঘটত প্রায় বিনা চিকিৎসায়। এই ব্যাপারটা ওঁর
মতন চিকিৎসককে বড়ো কষ্ট দিত। প্রয়াই ভাবতেন,
কীভাবে এর সমাধান
করা যেতে পারে। একদিন – ইউরেকা! উনি একটা ঘোড়ার গাড়ি তৈরি করলেন যার মাঝের
কামরা দুইজন আহত রোগীকে নিয়ে আসতে সক্ষম। তাতে থাকত লেদার দিয়ে মোড়া তলায় রোলার দেওয়া ঘোড়ার চুলের তৈরি নরম তোশক যেটার মধ্যে শুয়ে রোগী ইচ্ছামতো নাড়াচাড়া করতে পারত নিজের সুবিধামত। হাওয়া চলাচলের জন্য থাকত জানালা আর অবশিষ্ট জায়গাটাতে থাকত ওষুধ এবং অন্যান্য
প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। সামনের দিকে একটা পাটাতন ভাঁজ করা থাকত যা প্রয়োজনে পেতে দিলে একটি সুন্দর অপারেশন টেবিল
তৈরি হয়ে যেত। এটাই পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম অ্যাম্বুলেন্স। যা আজও সমানভাবে অতিপ্রয়োজনীয়।
তবে এই ঘোড়ায় টানা অ্যাম্বুলেন্সের আগে কিন্তু ল্যারি প্রথম ব্যবহার করেন উট। উটের
দু’পাশে দুটো ছোটো ছোটো কক্ষ তৈরি করেন ঠিক একই পদ্ধতিতে।
তবে ল্যারি আর তার দল কিন্তু চিকিৎসা করতেন কে কতটা
জখম হয়েছে তার ওপর ভিত্তি করে। নেপোলিয়নের সার্জেন বলে কথা। যার বাঁচার আশা কম বা
নেই তাকে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে আসার কোনও অর্থ নেই। যাকে
বাঁচানো যেতে পারে তারাই অগ্রাধিকার পেত।
ব্যস, আমি আজ এইখানেই থামলাম। বড়ো
অবাক লাগে না? ঘটনা কীভাবে একটা আবিষ্কারের দোড়গোড়ায় আমাদের নিয়ে আসে, আর তারপর
কীভাবে মানুষের সমাজে আস্তে আস্তে তাঁর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে।
তোমরাও জানো নাকি এক-আধটা?
জানাবে আমায়? কমেন্টসে লিখলে আমিও জানতে পারব কিন্তু।
টা টা!
_____
No comments:
Post a Comment