সৌরমন্ডলের চোর
সাগরিকা রায়
সুবর্ণ বেডরুমে বসে
কম্পিউটারে গেম খেলছিল। মে মাসের রাত। আজ রাতের তাপমাত্রা
চল্লিশ ডিগ্রি সেলসিয়াস। খোলা জানালা দিয়ে হালকা বাতাস আসে অন্যদিন। আজ বাতাস নেই একটুও। ওদের বাড়ির পেছনদিকে বেশ বড়ো বাগান আছে। বাগানের দিকের দুটো জানালা হাট করে খোলা। বাতাস যেটুকু আসার, ওদিক দিয়ে আসছিল।
সুবর্ণ ঘড়ি দেখল। রাত পৌনে একটা। এখন শুয়ে পড়াই ভালো ভেবে সুবর্ণ কম্পিউটার শাট ডাউন
করার উদ্যোগ নিতেই খুব শীত করতে শুরু করল ওর। ঝট করে ঠান্ডা পড়ে গেল
কেন? রাত বেশি হওয়াতে মাটি ঠান্ডা হয়ে গেছে বলে কি
ঠান্ডা লাগছে? তাহলেও এতটাই ঠান্ডা লাগবে? সুবর্ণ অবাক হল। জানালাগুলো এবারে বন্ধ করে দিলে
বাইরের বাতাস আসা বন্ধ হবে। ঘরের টেম্পারেচার ফের বেড়ে যাবে।
সুবর্ণ চেয়ার ঠেলে উঠে
দাঁড়াল। ওর বেডরুমে মোট চারটে জানালা। আসলে এটা একসময় ড্রয়িং
রুম হিসেবে ব্যবহৃত হত। সুবর্ণর দাদুর শখ ছিল হাওয়াঘর তৈরি করার। সেই হাওয়াঘর এখন সুবর্ণর বেডরুম। খুব হাওয়া খেলত এ-ঘরে। এখনও খেলে। কিন্তু আজ কেন যে একটু বাতাস আসছে না কে জানে! বাতাস তো দূর, গরমে প্রাণ ফেটে যাচ্ছিল একটু
আগেও। এখন ঝট করে ঠান্ডা লাগছে! সুবর্ণ জোরে শ্বাস ফেলল। একটা জানালা বন্ধ করতে
করতে বাইরের দিকে তাকিয়ে দেখল ও। এমনিই তাকিয়েছিল। দেখল, বাইরেটা যেন স্থির হয়ে আছে। কোথাও প্রাণের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। সুবর্ণর কেন যেন মনে হল বাইরের হালকা
আলোছায়া পরিবেশটা নির্নিমেষে তাকিয়ে দেখছে সুবর্ণকে! যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছে প্রকৃতি। তিন নম্বর জানালাটা
বন্ধ করতে গিয়ে সুবর্ণর মনে হল, প্রকৃতি অবশ্যই জীবন্ত। প্রকৃতির অঙ্গ হল উদ্ভিদ। কে না জানে যে উদ্ভিদের প্রাণ আছে! আজ
রাতে নির্বাক প্রতিমা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বাগানের গাছপালা। একটা পাতা নড়ছে না!
চার নম্বর জানালা বন্ধ
করতে এগিয়ে যাচ্ছে সুবর্ণ, একতাল দলা পাকানো ধূসর
মাটি ধুপ করে এসে ঘরের ভেতরে পড়ল। চমকে উঠল সুবর্ণ। এ কী? কেউ ছুড়ে ফেলেছে মাটি জানালা দিয়ে? কে করবে এমন? জানালার সামনে এগিয়ে ঝুঁকে পড়ে দেখতে ভয় করছিল। কেউ আছে বাইরে। সে সুবর্ণকে দেখে ওকে টার্গেট করে ফের মাটি ছুড়বে। কিন্তু কে আছে বাইরে? এমন তো কখনওই হয়নি এখানে!
এত রাতে… ঠিক বস্তির দুষ্টু ছেলেগুলো! যেভাবে হোক, জানালাটা বন্ধ করে দিতে হবে।
সুবর্ণ মাথা নিচু করে জানালার সামনে এগিয়ে গেল। ঝট করে উঠে দাঁড়িয়ে পাল্লাদুটো টেনে বন্ধ করে দিল। ব্যাস! কাল খোঁজ করে দেখতে হবে এটা কাদের কাজ। পেছন ঘুরেই মাটিগুলো দেখে মাথা খারাপ হয়ে গেল। ঝকঝকে ঘর কেমন নোংরা হয়ে গেল মুহূর্তের মধ্যে। এসব এই রাতে কে পরিষ্কার করবে? অথচ এই ঘরেই ওকে রাত কাটাতে হবে। মন বেজায় খিঁচড়ে গেল। তোম্বা মুখে নিজেকেই উদ্যোগ নিতে হল। এখন একটা ঝাঁটা চাই। কিন্তু কথা হল, ঝাঁটা কোথায়! মা বলতে পারবে। মা এখনও জেগেই আছে। পরীক্ষার খাতা দেখছে। রাতে না দেখলে দিনে সময় পায় না।
সুবর্ণ ঘর থেকে বেরিয়ে ঝাঁটা খুঁজে নিয়ে এসে অবাক। কী কান্ড! ঘরে একফোঁটা মাটি নেই! একেবারে সাফসুতরো সব! মানেটা কী দাঁড়াল? কে এসেছিল এ-ঘরে ওর অনুপস্থিতিতে? সুবর্ণ দরজার মুখে দাঁড়িয়ে ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করছিল। এত রাতে সবিতাদি কি এসেছিল এ-ঘরে? উঁহু, সবিতাদি এসময় কখনই আসবে না। সে ঠিক রাত এগারোটায় ঘুমিয়ে পড়ে। মা রাত জেগে খাতা দেখছে বলে শোয়ার আগে ফ্লাস্ক ভরে কফি বানিয়ে মাকে দিয়ে আসে। ব্যস, সবিতাদির আজকের মতো ছুটি। তাহলে?
ভাবতে ভাবতে যেখানে সুবর্ণ মাটির তাল পড়ে ছিল, সেই জায়গাটা ফের দেখল। না তো! একফোঁট্টা মাটি নেই! চোখে ভুল দেখেছে নিশ্চয়ই। এতক্ষণ ধরে গেম খেলে চোখ ভুলভাল দেখেছে। কারণ হাতড়ে জাবাব না পেলে যা হয়, চোখে ভুল দেখাটা মেনে নিয়ে স্বস্তি পেল ও।
ঘুমোবে বলে রাতের পোশাক পরতে গিয়ে চমকে উঠল সুবর্ণ। কোথায় একটা ঘসস ঘসস শব্দ হচ্ছে যেন! কোথায় হচ্ছে শব্দটা? এই ঘরে? এই ঘরে কোথায় শব্দ হচ্ছে? কেনই বা শব্দ! ওয়াশ রুমে জল পড়ে যাচ্ছে কি? ওয়াশ রুমের ভেতরে উঁকি দিল সুবর্ণ। না, কোনও অস্বাভাবিকত্ব নেই কোথাও। কিন্তু ঘটনা হল, শব্দটা হচ্ছে এবং হয়েই যাচ্ছে! বাইরের শব্দ ঘরে আসার সুযোগ নেই যেহেতু জানালাগুলো সবই বন্ধ। একটা অদ্ভুত ঘটনা হল, শব্দের সঙ্গে সঙ্গে ঘরের তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে। খুব ঠান্ডা লাগছিল সুবর্ণর। মুখ তুলে ঘূর্ণায়মান পাখার দিকে তাকাল সুবর্ণ। সুইচ টিপে পাখা বন্ধ করে দিতেই শব্দটা আরও স্পষ্ট শোনা যাচ্ছিল। আর মুখ উঁচু করে পাখাটা দেখতে যেতেই চোখের সামনে শব্দের উৎস দেখতে পেল ও।
ভেন্টিলেটর দিয়ে নেমে আসছে অনেকটা মাটি! ধূসর মাটি। ঝুর ঝুর করে নয়, নেমে আসছে দলা দলা মোটা ধারায়। সুবর্ণ বিষয়টা বুঝতে পারার আগেই ওর পেছনে কিছু হচ্ছিল বলে মনে হল ওর। তীব্র ভয় নিয়ে পেছন ফিরে হতভম্ব সুবর্ণ। এরা কারা? কখন ঢুকেছে এ-ঘরে? গোটা পাঁচেক লোক ঘরের মধ্যে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। এরা লুটপাট করতে এসেছে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। ঢুকল কেমন করে? এই মুহূর্তে সুবর্ণর কাছে অস্ত্র বলতে ক্রিকেট ব্যাট। আর সেটা আছে ওর থেকে দশ পা দূরে। আনতে হলে এদের পাশ কাটিয়ে যেতে হবে। সুবর্ণ লোকগুলোকে ভালো করে দেখল। হাট্টাগাট্টা লোকগুলোর চেহারার উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল এরা এক সাইজের, একই উচ্চতা, একইরকম দেখতে প্রায়! প্রায়? না না, এরা হুবহু একইরকম! মুখগুলো ধূসর। কাঁচুমাচু। সুবর্ণ বুঝতে চেষ্টা করছিল আক্রমণটা আসবে কীভাবে! সোহমদার থেকে শেখা ক্যারাটে ছাড়া পাঙ্গা নিতে পারার কিছু নেই ওর। দেখা যাক, এরা কী করে। সুবর্ণ পজিশন নিয়ে দাঁড়াল। ডান পা আগে, বাঁ পা পিছে নিয়ে হাতের মুঠি মুখের সামনে ধরে দাঁড়িয়ে চোখ সজাগ রেখে তাকিয়ে দেখছিল ও।
হাট্টাগোট্টারা ওর দিকে তাকাচ্ছে চোখ পিটপিট করে। এদেরই একজন সুবর্ণর পেছনে কী হচ্ছে দেখবে বলে খানিক ঝুঁকে গেল। তখনই সুবর্ণর মনে পড়ে গেল ভেন্টিলেটর দিয়ে নেমে আসা মাটির কথা। চট করে পেছন ঘুরে দেখতে যাচ্ছিল। সাবধান ছিল, ও পেছন ঘুরে গেলেই ওর পেছন থেকে আক্রমণ আসতে পারে। যদিও দু’দিকেই আক্রমণের পুরো আশঙ্কা আছে। ঘুসি বাগিয়ে রেখেই মাথা সামান্য ঘুরিয়ে পেছনে কী ঘটে যাচ্ছে দেখার চেষ্টা করতে যা দেখল, শরীর হিম হয়ে গেল। রক্ত চলাচল একমুহূর্তের জন্য বন্ধ হয়ে গেল। এটা হচ্ছেটা কী ঘরে?
সুবর্ণর চোখের সামনে ধূসর মাটি মেঝে থেকে চার ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় খাড়া হয়েছে। ধীরে ধীরে অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসছে মাটির মধ্যে। মাটিগুলো তীব্র গতিতে পাক খাচ্ছে। খেতে খেতে মানুষের অবয়ব নিচ্ছে! ক্রমে সেগুলো একই সাইজের হাট্টাগাট্টা মানুষ হয়ে দাঁড়াল! দাঁড়িয়ে শরীরের আড়মোড়া ভাঙছিল। কেউ কেউ আবার ডান হাতকে বাঁ হাতে ঠিকঠাক সেট করতে না পেরে খুলে ঠিক জায়গায় বসিয়ে নিচ্ছিল। সুবর্ণ হতবাক অবস্থা কাটাতে পারছিল না।
এই সময় স্রোওওওত স্রোওওওওত
শব্দ উঠল একটা। সামনে পেছনে, ঘর জুড়ে শব্দ উঠেছে। এক অস্বাভাবিক শব্দ! পিকিউলিয়ার সাউন্ড!
খানিকটা মেটালিক বলা যায়। কখনই এইধরনের শব্দের
সঙ্গে পরিচয় হয়নি সুবর্ণর। পা টেনে টেনে সুবর্ণর পেছনের লোকগুলো
এগিয়ে সামনে এসে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়াল। শব্দটা ঘোরাঘুরি করছে এই সারিবদ্ধভাবে
দাঁড়ানো লোকগুলোর মধ্যে।
সুবর্ণ মাথা ঠান্ডা
রাখার চেষ্টা করল। এরা কী বা কোন জাতের অস্ত্র ব্যবহার করবে বোঝা যাচ্ছে
না। কালাশনিকভ? নিডার? মুঙ্গের? ছোরাছুরি? নাকি অন্য কিছু, যার নাম শোনেনি সুবর্ণ! ইদানিং অ্যসিড বাল্ব-এর রমরমা
চলছে! এরা কারা সেটা জানা হল না। মাটি থেকে কীভাবে মানুষের
রূপ নিল! কেমন করে কী হচ্ছে সুবর্ণর বুদ্ধির বাইরে। টেকনোলজি এতটাই কি উন্নত হয়েছে যে একতাল মাটি থেকে মানুষ হয়ে উঠতে পারা যায়? এ কি সম্ভব? এখন একটাই বুদ্ধি হল যে আক্রমণটা
হবে, সেটার প্রতিরোধ
করা। তৈরি থাকা হল সবচেয়ে বড়ো বুদ্ধি। সে এরা যেই হোক না কেন! লড়বে সুবর্ণ। মোবাইল ফোনটা টেবিলে আছে। টেবিল পর্যন্ত যেতে হবে। তারপর বাবা বা মায়ের সঙ্গে কানেক্ট করতে হবে। মা কি শুয়ে পড়েছে? মার রুমে আলো জ্বলছে না? মা জেগে থাকলে কিছু
কি টের পেত না?
ভূতপ্রেতে বিশ্বাস নেই
সুবর্ণর। কিন্তু এই সময়ে দাঁড়িয়ে মনে হল যারা ওর সামনে দাঁড়িয়ে, তারা মানুষ নয়। এমনকি প্রাণীও নয়! কিছু ধূসর মাটি ক্রমে মানুষের আকৃতি নিয়েছে মাত্র। তাহলে এরা কারা? অলৌকিক জীব? আঁধার জগত থেকে এসেছে? পিশাচ? কিন্তু
এরা কীভাবে আক্রমণ করবে বা কোন অস্ত্র প্রয়োগ করবে বোঝা না গেলে মুশকিল।
সেই সাউন্ডটা বেড়ে চলেছে। সুবর্ণর বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বুঝে ফেলেছে
ওরা সম্ভবত। এখন কি অ্যাট্যাক করবে? সুবর্ণ চকিতে সারিবদ্ধ লোকগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখল। বলা যায় না লাফিয়ে এসে কন্ঠনালী কেটে না দেয়!
“ও স্রোওওওত, মা-ই-রি ব-ল-ছি, অসস-ত-রো নেএ-ঈ-কো!
অস্তরো নেই কোও-ও!
বলা বাহুল্য, হতবাক
সুবর্ণ! এরা অদ্ভুতভাবে কথা বলছে! সকলে একসঙ্গে, বলা যায় সমস্বরে কথা বলছে! একটা কথা ওরা বলছে, ওদের কাছে অস্ত্র নেই! সত্যি বলছে কি না কে জানে! এরা টেলিপ্যাথি জানে!
বা সুবর্ণর বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখে এরা ভাবছে, সুবর্ণ ওদের বন্ধু ভাবছে
না। তাই আগেই আত্মসমর্পণের চেষ্টা করছে! কিন্তু প্রশ্নগুলো পরপর আসছে। এক নম্বর, এরা কারা। দু’নম্বর, এল কোথা থেকে? তিন, কেন এল সুবর্ণর রুমে? চার,
কী চায়? পাঁচ, পিকিউলিয়ার
সাউন্ডটা কীসের? ছয়, এরা একসঙ্গে কথা বলে
কেন? সাত, এরা ঘরের টেম্পারেচার কি কমিয়ে
দিয়েছে? কীভাবে?
শব্দটা তীব্র হল। এবারে যেন নদীর স্রোত বেড়ে গিয়ে সমুদ্রের কল্লোল শুনতে পাচ্ছে সুবর্ণ। আরব সাগরের ঢেউয়ের শব্দ শুনেছিল একবার। এরা কারা, বা কেন এসেছে জানে না বলেই ভয়টা ভেতরে ভেতরে কাজ করছিল। বাবা, মা কেউ কাছেপিঠে নেই। কাউকে ডাকার সুযোগ পাচ্ছে না। সাহস পাচ্ছে না ঘর থেকে বাইরে যাওয়ার।
“আম-আমরা কাঁদ-কাঁদছি! এ-এটা কান-কান্নার শব-শব্দ! স্রোও-ও-ও-ত!”
“কান্না? কেন? কে তোমরা? কাঁদছি
মোরা কাঁদছি দেখ, কাঁদছি মোরা আহ্লাদী! কে কাঁদতে বলেছে তোমাদের?”
“খেউ না… খেউ না… স্রো-ও-ও-ত!”
সুবর্ণ অবাক হয়ে গেল। এটা এদের কান্নার শব্দ?
হাট্টাগোট্টা লোকগুলো
ওপর দিকে মুখ করে অদ্ভুত শব্দে কাঁদছে, “আমরা গ-গরীব! বেরেন নেই! তোমাদের থেকে অনেক পি-পিছিয়ে
আ-আছি! স্রো-ও-ও...!”
সুবর্ণ আস্তে আস্তে
অনুধাবন করছিল পুরো কেসটা। এরা এই পৃথিবীর কেউ নয়। অন্য কোনও জগত থেকে এসেছে! কোথা থেকে এল?
এরাই কি এলিয়েন?
“অনে-এ-ক দূর থেকে এসেছি। সেখানে সু-সুবিধে নেই কিছুর। নেই, সুবিধে নেই কিছুর… নেই…! স্রো-ও-ত!”
কান্নাটা ক্রমে কমে
আসছে। কিন্তু বোঝা যাচ্ছে না কতদূর থেকে এরা এসেছে। এলই বা কেন? ব্রেন নেই বলছে কেন? সত্যি কি ব্রেন নেই? তাহলে মাটি থেকে মানুষের চেহারা
নিল কেমন করে? কোন টেকনোলজিতে?
“মাটিই
তো সবকিছুর মূলে! আমরা মাটিমাত্র। যেকোনও পদার্থের আকৃতি নিতে পারি। আর কিচ্ছু না।”
সুবর্ণ অবাক হল। ও কোনও পত্রিকায় মহাকাশ-বিজ্ঞান নিয়ে পড়েছিল। আমাদের এই মিল্কি-ওয়ে গ্যালাক্সিতেই দুশো থেকে চারশো বিলিয়ন নক্ষত্র আছে। দুশো বিলিয়ন পৃথিবীর মতো প্রাণধারণের উপযুক্ত গ্রহ থাকতেই পারে। যদি তার কোনও অংশে বুদ্ধিমান প্রাণী থাকে, তাহলেও
এই গ্যালাক্সিতেই মানুষের চেয়ে উন্নত সভ্যতা থাকতে পারে। এদের এক অতি ক্ষুদ্র অংশ যদি আন্তঃসৌর যাত্রা করার রাস্তা পেয়ে থাকে, তাহলে একদিন এই পৃথিবীতে এলিয়েনদের আসা সম্ভব।
“আম-আমরা পিছি-পিছিয়ে আছি। জড়বৎ, জড়বৎ!” সমস্বরে কাঁদছিল ওরা। “লক্ষ লক্ষ বছর আগে তোমরা যেম-যেমন ছি-ছিলে।”
“তোমরা
এলে কেমন করে? ব্রেন নেই, তো মহাকাশে পাড়ি
দেওয়ার উপযুক্ত বৈজ্ঞানিক সূত্রের উদ্ভাবক তোমরাই!”
“স্রো-ও-ও-ত, আমাদের
সে ক্ষমতা নেই! নেই! তোমাদের মহাকাশযান
আমাদের গ্রহের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আমরা সেই যানে আটকে থাকি। কিছু মাটি বিজ্ঞানীদের নজর এড়িয়ে গেল। আমরা এখানে এলাম। তোমার মাস্টার বিজ্ঞানীদের একজন সেই মাটি নিয়ে নিজের ল্যাবে এলেন পরীক্ষা করার
জন্য। আমরা তোমার কাছে এলাম চলে। তুমি আমাদের কিছু শেখাও। খুব অল্প দিয়ে শুরু কর। আমাদের তো বেরেন নেই। যা আছে তা দিয়ে বেশি কিছু শেখা অসম্ভব। তোমরা কত এগিয়ে গেছ! আমরা ধাতু আবিষ্কার করেছি। আগুনের ব্যবহার জানি। আমাদের মাস্টার বিজ্ঞান জানে। কিন্তু আমরা নতুন টেকনোলজি কিচ্ছু
জানি না। বুঝি না।”
সুবর্ণ সাবধান হল। এরা বানিয়ে বলছে মনে হচ্ছে। কিচ্ছু জানে না? তো কী জানতে হবে বলে ভেবেছে? প্রশ্নটা করে
ফেলে সুবর্ণ। প্রশ্ন শুনে সব কাঁচুমাচু মুখে এ ওর দিকে তাকাতে থাকল। দেখে পিত্তি জ্বলে গেল সুবর্ণর। ওর বাবা একজন বিজ্ঞানী। এই মুহূর্তে ল্যাবে কাজ করছেন। হয়তো ওরা পৃথিবীর কোনও মহাকাশ যানে
চেপে চলে এসেছে। মানে এরা এই গ্রহ সম্পর্কে জানে! আসলে এই ভিনগ্রহীরা মর্ডান টেকনোলজি জানতে চায়। কিন্তু সুবর্ণর কাছে কেন? ওর বাবার কাছেই
বলতে পারত! সুবর্ণ কী জানে? কতটুকু জানে?
“তোমার
মাস্টার ল্যাব থেকে বেরিয়ে রেস্ট নিচ্ছে। সেই ফাঁকে আমরা বেরিয়ে
এসেছি। রোজ তাই করি। তুমি ওটা কী নিয়ে বসে থাকো? কম্পিউটার না কী যেন নাম…!”
“তোমরা
আমাকে লুকিয়ে দেখো? কী সাংঘাতিক কান্ড! কে তোমরা?”
“আমাদের
গ্রহের নাম বলতে পার এক্স। এখনও তোমরা আমাদের গ্রহ সম্পর্কে
জানো না। তোমাদের কাছে আমরা আননোন ফ্যাক্টর। কিচ্ছু নেই আমাদের গ্রহে। আমরা নিজেদের পালটাতে চাই। আমাদের শেখাও। কম্পিউটার শিখব। তোমার মাস্টার ছোটো
যন্ত্র কানে চেপে কথা বলে অনেক দূরের মানুষের সঙ্গে। রাত হলে আলো জ্বালাও। কেমন করে? আমরা পারি না, স্রো-ও-ও-ত!”
“তোমরা
এসব জানো না? সে কী! এস, আমার মতো ছেলেরাও এসব বেশ জানে। হুম, এস, শিখতে চাইলে কেন শেখাব না? তোমরা প্রথম থেকে শেখ।”
সুবর্ণ ছাত্র পেয়ে খুশি। যা শিখে এসেছে এতদিন, সব উজাড় করে ঢেলে দিতে
লাগল। তবে এদের ব্রেনে গ্রে ম্যাটার খুব কম। একটা জিনিস শেখাতে পাঁচ-ছয়দিন করে সময় লাগছে। একদিন জিজ্ঞাসা করল, “পৃথিবী গ্রহ সম্পর্কে
কেমন করে জানলে? কী কী জানো?”
“আমাদের
মাস্টার কীভাবে জেনেছিল জানি না। কিছু ইনফরমেশন দিয়েছিল মাস্টার। চব্বিশ ঘন্টায় পৃথিবী নিজের কক্ষপথে একবার করে পাক খায়। একটি মাত্র সূর্য। একটি উপগ্রহ - চাঁদ, অভিকর্ষজ ত্বরণের মান ৯.৮১মিটার/সেকেন্ড। সূর্য থেকে এটি তিন নম্বর গ্রহের অবস্থানে আছে।”
“তোমরা
মাস্টার কাকে বলছ? ও আচ্ছা, তোমরা যাকে
মাস্টার বলো, আমি তাঁকে বাবা বলি। বাবা মানে তিনি সত্যি আমাদের মাস্টার।”
সুবর্ণ বাবা সম্পর্কে
জানাতে থাকে। শুনতে শুনতে বেঁটে লোকগুলো হাঁ হয়ে যায়। কী মিল দেখ! একদম আমাদের মাস্টারের মতো।
রাতে শুতে যাওয়ার আগে
স্নান করা অভ্যেস সুবর্ণর। আজ মনে হল, এরা ভিনগ্রহী। এদের সংস্পর্শে আসা ঠিক কি? বাবার ল্যাবে ঢুকতে হলে স্টেরিলাইজড প্রোটেক্টিভ স্যুট পরে ঢুকতে
হয়। মনে ছিল না। কাল থেকে স্যুট পরে
থাকতে হবে ওদের কাছাকাছি হতে হলে।
পরদিন ফের বিকেলে বাবা
বেরিয়ে গেলেন দিল্লিতে অনুষ্ঠিতব্য এক বিজ্ঞান সম্মেলনে। সুবর্ণ ল্যাব থেকে আগেই
বের করে রেখেছিল স্যুট। রেডি হয়ে ওদের অপেক্ষা করছিল। ওরা এল জানালা দিয়ে।
দিন পনেরো হলে সুবর্ণ
মোটামুটি শিওর হল যে এরা খানিকটা শিখেছে। বলছে ব্রেন নেই, কিন্তু সেটা দুঃখ করে বলছে। আসলে এরা পৃথিবীর অগ্রগতির
থেকে পিছিয়ে আছে। কিন্তু ওদের সেই মাস্টার ওদের জাগিয়ে তুলছে। জ্ঞান পিপাসা
পেয়েছে ওদের। কম্পিউটার শিখতে চায় ওরা। একদিন সুবর্ণর বাবা ওদের ক’জনকে স্যাম্পেল হিসেবে কোনও বিজ্ঞান-সম্মেলনে নিয়ে গেলেন। ক’জন মানে খানিকটা মাটি দেখবে সকলে। সেদিন পড়াশোনা বন্ধ থাকল।
ঠিক চারদিন পরে ওরা
ফিরলে ফের পড়া শুরু হল। এবারে কম্পিউটার শিক্ষাদান। সুবর্ণ সুন্দর করে বুঝিয়ে
দিল। অনেকটা ধীমানদার মতো করে। প্রথমে বুঝিয়ে দিল। তারপরে হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার বোঝাতে শুরু
করতেই সবিতাদি হাজির। ভ্রূ তুলে দরজা ঠেলে ঢুকেছে ঘরে। “কী করছ তুমি?
এত জোরে জোরে কার সঙ্গে কথা বলছ?”
“না তো!”
বলেই চমকে ওদের দিকে তাকিয়ে অবাক সুবর্ণ। কেউ নেই ঘরে!
“ফোনে
কথা বলছ বুঝি?”
“না তো।” কী যে বলা উচিত বুঝতে পারছিল না
সুবর্ণ।
“পড়া
করছ! আমি ভাবছি কার সঙ্গে কথা বলছ। আচ্ছা যাচ্ছি।”
সবিতাদি চলে গেল। কিন্তু সুবর্ণর মাথায় প্রশ্ন রেখে গেল। এরা কি অদৃশ্য হতে পারে! তাহলে নিজেদের অজ্ঞ বলছে কেন? সবিতাদিকে
দেখে হাপিশ হয়ে গিয়েছে এরা, মানে সবিতাদির উপস্থিতি সুবর্ণর আগেই
টের পেয়েছিল! সঙ্গে সঙ্গে হাওয়া হয়ে গেল?
সুবর্ণ হাঁক পাড়ল, “এই যে! চলে গেছ নাকি?”
বলতেই যেখানে ওরা ছিল, সেখানেই অবয়ব গড়ে উঠল আস্তে আস্তে। ছায়া থেকে কায়া। চৌকো চৌকো তাসের মতো দাঁত বের করে বলল, “এখানেই আছি!”
“উদ্ধার
করেছ।” মনে মনে বলল সুবর্ণ। মুখে বলল, “তা, বলো দেখি, হাপিশ
হলে কেমন করে? তোমরা গরিব, বেরেন নেই!
তাহলে এতসব জানো কী করে?”
“সত্যি
সত্যি! আমরা বাতাসের মধ্যে যেখানে ভ্যাকেন্ট পেয়েছি, সেখানে ঢুকে গিয়েছি।”
“এটাও
পার? আমরা তো পারি না!”
“কিন্তু
তোমরা কতকিছু জানো। তুমি কম্পিউটারে গেম খেল।” বলে সে কী কান্না! স্রো-ও-ও শব্দে ঘর
ভরে গেল।
আশ্চর্য কান্ড হল, কাঁদলেও জল পড়ে না চোখ দিয়ে! সুবর্ণ ভাবে,
বাবা কি এসব জানতে পেরে গেছে? নাকি বাবার থেকে সুবর্ণ এগিয়ে আছে?
সুবর্ণ ডেকে নিল ওদের, “এস, আজ গেম খেলি। আমার অনেকদিন গেম খেলা
হয়নি!” বলে লেটেস্ট হাই ডেফিনেশন গেম খেলতে শুরু করল। ওরা ক’জন হালু-মালু
চোখে গেম খেলা দেখছিল। একসময় ওরা খেলতে চাইল। সুবর্ণ বুঝিয়ে দিল কীভাবে খেলতে হবে।
ভুলভ্রান্তি হতে হতে
একসময় ওরা পারল। ওরা সকলেই নয়, কয়েকজন
পারল গেমটা খেলতে। একজন গেমটার সফটওয়্যার, একজন কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার সম্পর্কে জানতে চাইল। সুবর্ণ যতটুকু জানে বুঝিয়ে দিল। সুবর্ণ অতশত জানে না। এটা কার রেসিং গেম। ও নিয়মিত খেলে। বলতে গেলে খুব প্রিয়
গেম ওর। দেখা গেল ওরাও খুব মজা পেয়েছে গেমটা খেলে। সুবর্ণ জোর করে কম্পিউটার শাট ডাউন করে দিতে মুখ তোম্বা করে চলে গেল লোকগুলো। এদের কি লোক বলা উচিত? হেসে ফেলে সুবর্ণ।
মা ডাকছিল। আজ মা’র কলেজ নেই। সুবর্ণর মা’র সঙ্গে বের হওয়ার কথা। কলেজ স্ট্রিটে যাবে মা। সুবর্ণ ঘরের জানালা বন্ধ করে দিল। ফিরতে দেরি হলে রোদ ঢুকে ঘর গরম করে রাখবে। সুবর্ণ এসি ইউজ করে
না। শ্বাসের প্রবলেম হয় একটু। বাবা বলেছেন, যদি ইউজ করতে না চাও, করো না। জানালা বন্ধ করে দিয়ে মা’র সঙ্গে বেরিয়ে গেল সুবর্ণ। প্রচুর বইপত্র কিনবে
মা। যদিও অনলাইনে বই আসে। তবুও কলেজ স্ট্রিট না গেলে ভালো
লাগে না মা’র।
বই কেনা, বাইরে খাওয়া এসব করে বাড়ি ফিরতে বিকেল হল। টায়ার্ড ফিল করছিল সুবর্ণ। নিজের জন্য কিছু বই কিনেছে ও। সেগুলো নিয়ে নিজের ঘরের দরজা ঠেলে স্তম্ভিত হয়ে গেল। তেনারা গেম খেলছেন! সেই কার রেস গেমটা! ওকে দেখে মুখ হালু-মালু করে তাকিয়ে হুড়োহুড়ি করে উঠে পড়ল। “এই মাত্তর
এসেছি, এই মাত্তর!”
সুবর্ণ রেগে গেল। “তোমরা ঘরে ঢুকলে কেমন
করে? জানালা বন্ধ… ওহো, ভেন্টিলেটর দিয়ে? অনুমতি না নিয়ে কারও ঘরে ঢুকতে নেই,
জানো না?”
সবক’টা এসে সুবর্ণর
গায়ে প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়ল। “আর হব্বে না এম্মন। পিলিজ পিলিজ!”
সুবর্ণ একটু ভাবল। অনেক প্রশ্নের জবাব পাওয়া যায়নি। যেমন, এরা একসঙ্গে কথা বলে কেন। প্রশ্ন মনে আসতেই ওরা
স্রো-ও-ও-ত করতে শুরু করল। “তোমাদের শব্দগুলো একা উচ্চারণ করতে পারিনেকো। বাতাসে হারিয়ে যায়। সকলে মিলে একই শব্দকে উচ্চারণ করলে শব্দটা পালাতে
পারে না!”
“বেশ,
তোমাদের কান্নার শব্দ অমন কেন?”
“আমরা
এরকমই। কী করব! গরিব।”
“তোমরা
নিশ্চয়ই ফিরে যাবে ফের?”
“হ্যাঁ
হ্যাঁ, যাব যাব।”
“কেমন
করে যাবে?”
“মাস্টার
নিয়ে যাবে।”
“যান
আছে তোমাদের?”
“আছে!
আসতে অনেক সময় লাগবে মাস্টারের। ভুল করে পৃথিবীর অন্য
অংশে নেমেছে। আসতে সময় লাগবে। তবে চলে আসবে।”
সেদিন রাতে শুয়ে শুয়ে
সুবর্ণ ভাবছিল এই ভিনগ্রহীদের কথা। এদের কথাবার্তা শুনে কখনও মনে হয়
মিথ্যে বলছে। কখনও মনে হয় সত্যি বলছে। একবার বলেছে ওরা যান
বানাতে জানে না। সেই কনসেপ্টটাই নাকি নেই ওদের। আবার বলছে, মাস্টার ওদের নিতে এসে গেছে নিজস্ব যানে। ব্যাপারটা যে কী! বাবাকে বলে দেখবে? কে বলতে পারে এরা পৃথিবীর
ক্ষতি করবে কি না! ভাবতে গিয়ে ঘুম চলে গেল। এখন বাবার সঙ্গে কথা বলা যাবে না। আগামী পরশু আসছেন বাবা। তখন বলা যাবে।
পরদিন অনেকক্ষণ অপেক্ষা
করল সুবর্ণ। ওরা আসছে না কেন? চিন্তিত সুবর্ণ বাবার নিজস্ব রিসার্চ ল্যাবে গিয়ে দেখল, কাচের বক্সের ভেতরে
ওরা নেই! একফোঁটা ধূসর মাটি পড়ে নেই কোথাও! মানে, ওরা চলে গেছে? কী আশ্চর্য!
কখন গেল? বলেও গেল না?
সুবর্ণর মন খারাপ। নিজেকে সামাল দিতে জানে ও। অনেকদিন ভালো করে পড়াশোনা করা হয়নি। টেবিল গুছিয়ে রাখল সুবর্ণ। ব্লু-রে ডিস্কগুলো গুছিয়ে রাখছিল। আচ্ছা, কার রেসিং এর গেমটা… না, ওটা কোত্থাও নেই! রেগে যেতে গিয়ে হেসে ফেলল সুবর্ণ। ওরা যাওয়ার সময় গেমটা নিয়ে গেছে। সে কারণেই বলে যায়নি!
বাবা ফিরলেন যখন, সুবর্ণ সবটুকু বলে হাসতে শুরু করতেই বাবার ভ্রূ কুঁচকে উঠল। “এই ভিনগ্রহীরা ভারি চোর। এদের কাজই হল বিভিন্ন
গ্রহে ঘুরে ঘুরে চুরি করা। খুব মিথ্যে বলে। নিজেরা কিচ্ছু জানে না। অন্যের প্রোডাক্ট নিয়ে মোড়লি! এক্সগ্রহ বলেছে? না, না। এক্সগ্রহ তো অন্য গ্রহ। এরা সৌরমন্ডলের ছিঁচকে
চোর। নানান গ্রহে যাবে, আর
চুরি করার তালে থাকবে! মোটামুটি অনেকগুলো গ্রহ থেকেই এদের খোঁজাখুঁজি
চলছিল। অনেকদিন ধরে। পালিয়ে গেল? ইসস্, এসব যদি তোকে আগেই জানিয়ে রাখতাম!”
সুবর্ণ অবাক হয়ে গেল। বললেই পারত সুবর্ণকে যে গেমটা ওদের পছন্দ। সুবর্ণ দিয়েই দিত। মাঝখান থেকে চোর
বদনাম নিয়ে গেল। কোনও মানে হয়?
_____
অলঙ্করণঃ অনির্বাণ
সরকার
গ্রহান্তরের চোরেরা বেশ রসিক। তবে খুব বেশি ক্ষতিকর নয় এই বাঁচোয়া।সুবর্ণর অবশ্য বিজ্ঞান শেখানোর সময়ে একটা তথ্যে ভুল হয়েছিল। অভিকর্ষজ ত্বরণের মান ৯.৮১মিটার/সেকেন্ড স্কোয়ার হবে।
ReplyDelete