এক যে ছিল বেগুনি ব্যাঙ। সারাবছর তার মাটির তলায় দিন কাটত। বেশ গোলগাল ফুর্তিবাজ চেহারা, নাকটা ছিল তার শুয়োরছানার মতো খ্যাঁদা।
একদিন তার ঘুম ভেঙে উঠে খুব ইচ্ছে হল একটু হাওয়া খেতে বেরোনোর। এমনিতে তার ঘরে রোদ ঢোকে না, আলো ঢোকে না, একদম ঠাণ্ডা স্যাঁতসেঁতে। তাই বেগুনি ব্যাঙ চুপিচুপি খুব ভোরবেলা বেরিয়ে এল বাইরে। পুকুর-টুকুর, বাগান-টাগান পেরিয়ে একটা মস্ত প্রাসাদের দেওয়ালের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল সে। অমনি একটা হলুদ জামা, সরু গোঁফওয়ালা টিংটিঙে লোক এসে তাকে খপ করে ধরে ফেলল।
বেগুনি ব্যাঙ বলল,
“রঙটা আমার খাসা
মাটির মধ্যে বাসা
একটুখানি ঘুরতে যাব ছিল মনের আশা
আমায় কেন ধরলে বাপু বলো সহজ ভাষায়।”
টিংটিঙে লোক বলল,
“ব্যাঙ হয়ে যে ছড়া কাটছিস,
আমি হলাম কসাই
কাটব তোকে, ভাজব তোকে
খাবেন রাজামশাই।”
ব্যাঙ জিভ-টিভ কেটে বললো, “ছি ছি, এই দেশের রাজা ব্যাঙ ভাজা খান! এত ভালো ভালো খাবার থাকতে? স্যুপ খেতে পারেন, নুডল খেতে পারেন, পাস্তা কিংবা পোলাও খেতে পারেন।”
“না আমাদের রাজা টুং ফং নাকিসুকি সাপ, ব্যাঙ, প্রজাপতি সব খান। তারপর তুই হচ্ছিস বেগুনি ব্যাঙ, বেগুন দিয়ে দারুণ বড়া হবে। সচরাচর তো তোর দেখা মেলে না।”
“সে কী করে পাবে? আমি হলুম এনডেঞ্জার্ড স্পিসিস।”
“দ্যাখ বাপু, এত ইংরিজি বুঝি না আমি, তাইলে লিখতাম থিসিস।”
বেগুনি ব্যাঙ এবারে মরিয়া হয়ে বলে, “আমি কিন্তু দারুণ ভজন গাইতে পারি। ভেবে দেখো, ভগবানের গান করা ব্যাঙকে মেরে ফেলবে তুমি?”
“আমাদের রাজ্যে গান করা বারণ, জানিস না বুঝি? গান শুনলেই রাজা ফ্যাঁচ ফ্যাঁচ করে কাঁদতে শুরু করে। কাঁদলে আর যুদ্ধু করবে কী করে?”
“আচ্ছা, শোনো আরেকটা ছড়া-
নেবে কি? মোহর আছে এক ঘড়া।
হীরে জহরত পরবে গলায়,
সব আছে ওই মাটির তলায়।”
টিংটিঙে হলুদ জামা অমনি ব্যাঙের টুঁটি টিপে ধরে বলল,
“যদি দিস ঢপ
গনগনে আঁচে আজ করবই চপ।”
তারপর ব্যাঙ থপ থপ করে আগে আগে চলে, আর লোকটা তার পেছন পেছন।
একটু দূর গিয়ে একটা অশ্বত্থগাছের নিচে এসে ব্যাঙ বলে, “ওই গাছের গুঁড়ির নিচে একটা ছোট্ট দরজা আছে। ওখান দিয়ে সুড়ুৎ করে ভেতরে চলে যাও।”
“আর অমনি তুই পালিয়ে যাবি, তাই তো? আমি ক্লাস ফোর ফেল করেছি বলে আমাকে বোকা ভাবিস না।” বলে লোকটা একটা কৌটোর তলায় ব্যাঙটাকে চাপা দিয়ে সুড়ুৎ করে দরজা গলে নিচে নেমে গেল।
গাছের ওপর বসে তখন পা দোলাচ্ছিল দুষ্টু ডাইনি মিশকা মিকিসুকি। সে খুনখুনে গলায় হেসে বলল, “নতুন চাকর পেলুম। একে এবার আমার পোষা ব্যাঙ করে রাখব। তোর তো পাঁচ বছর কাটল। যা, এবার তোর ছুটি।”
অমনি বেগুনি ব্যাঙ মানুষ হয়ে গেল। সে ছিল ভিনদেশি গায়ক। এবার সে রাজসভায় চলল, রাজাকে গান শুনিয়ে কাঁদিয়ে তবে ছাড়বে।
_____
গ্রাফিক্সঃ পুণ্ডরীক গুপ্ত
ফাটাফাটি
ReplyDeleteAnek dhanyobad
ReplyDeletekhub bhalo legeche
ReplyDeleteAantorik dhanyobad
ReplyDeleteValo laglo pore
ReplyDeleteDhanyobad 😊
ReplyDeleteVison valo
ReplyDeleteThanks 😊😊
Deleteদারুণ বললে কম হবে। উঃ!বেগুনি ব্যাঙ দিয়ে বেগুনের বড়া! শেষটা অসাধারণ।
ReplyDeleteaantorik dhanyobad :) :)
Delete