মানুষের মতো মানুষ
অরিন্দম দেবনাথ
“জানো বাবা, অডিটোরিয়ামের পর্দায় ভিডিওটা দেখার পর সবাই উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিচ্ছিল। হাততালি আর থামছিল না। তারপর আমাকে ষ্টেজে ডেকে নিয়ে হেডমিস এই বইটা দিয়ে বললেন, ‘তুমি খুব লড়াকু। বড়ো হয়ে এই বইটা পড়বে।’ আর আমাদের ক্লাস টিচার-মিস ষ্টেজেই আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে বললেন, ‘ফরগিভ মি মাই সন, আই অ্যাম রিয়েলি সরি। গড ব্লেস ইউ।’ জানো, আজকে টিফিনের পর একটাও ক্লাস হয়নি। ছুটির পর বোমেস ওর ফেভারিট ডোরেইমন ইরেজারটাও আমাকে গিফট করেছে।”
“সে কি, কাল বললি যে গায়ে কাদা মাখার জন্য তোদের ক্লাস টিচার তোকে টিফিনের পর কান ধরে ক্লাসের বাইরে দাঁড় করে রেখেছিল! আজ কী এমন করলি যে স্কুলের অর্ধেক ক্লাস বন্ধ করে অডিটোরিয়ামে নিয়ে তোকে প্রাইজ দিল?”
“ওই কাদা মাখার জন্যই তো প্রাইজ পেলাম।”
“সে কি!”
“সেটাই তো অডিটোরিয়ামের পর্দায় দেখাল।”
“সব ক্লাস বন্ধ করে?”
“হ্যাঁ, ভিডিও দেখানোর আগে হেডমিস কী বললেন জানো?”
“কী?”
“আমরা এতদিন তোমাদের ভালো নাম্বার পাবার জন্য চাপ দিয়ে এসেছি। কিন্তু কতগুলো শিক্ষা দিতে ভুলে যাচ্ছি। গতকাল ক্লাস ওয়ানের একটি খুদে আমাদের সেই কথাটাই মনে করিয়ে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, ওই কাজটা করতে গিয়ে গায়ে মাটি-কাদা লাগার অপরাধে সে শাস্তিও পেয়েছে। আজ আমারা সেই কাজটির ছবি দেখব।”
“তারপর?”
“তারপর আর কী? পর্দায় আমাকে দেখাল!”
“পর্দায় তোকে দেখাল মানে? তোর ছবি তুলল কে?”
“বাবা, তুমি সব ভুলে যাও! জানো না, আমাদের স্কুলে অনেকগুলো সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে?”
“কী করেছিলি শুনি?”
“বকবে না তো?”
“না না, বল।”
“আমদের খেলার মাঠের ধারে, যেখানে আমরা সবাই বসে টিফিন খাই, সেখানে একটা গর্তে একটা ছোট্ট বেড়ালছানা পড়ে গিয়ে উঠতে পারছিল না। আমি সবাইকে বললাম, চল বেড়ালছানাটাকে গর্ত থেকে বের করি। বকা খাবার ভয়ে সবাই চলে গেল। কী আর করি। আমার ওয়াটার-বটলের জল ঢেলে মাটি নরম করে টিফিন কৌটোর ঢাকনা দিয়ে মাটি খুঁড়ে বাচ্চাটাকে বের করি।”
“এই কায়দাটা শিখলি কী করে?”
“অ্যানিম্যাল প্ল্যানেট থেকে!”
উপহারের প্যাকেটটা খুলতে বেরিয়ে এল বহু পুরনো একটি বই। বরিস পলেভয়ের ‘মানুষের মতো মানুষ’।
_____
magnificent - asli man n huush ka bachha, bravo story dada concept grt
ReplyDeleteবাহ
ReplyDeleteঅসাধারণ গল্প
ReplyDelete